২০২২ সালে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ অগ্রগতি হয়নি। এটি হয়তো স্থবির ছিল, অথবা আগের তুলনায় আরও খারাপ হয়েছে। এ জন্য ব্যবসায় সবচেয়ে বড় বাধা ছিল দুর্নীতি। গত বছর এই দুর্নীতিই ছিল ব্যবসায় উন্নতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডাব্লিউইএফ) এক যৌথ জরিপে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে জরিপের ফল উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়।
জরিপে বলা হয়, বিগত বছরগুলোর মতো ২০২২ সালেও দুর্নীতি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। দুর্নীতি ছাড়াও অবকাঠামোগত দুর্বলতা, ব্যাংক থেকে ঋণ প্রাপ্তির চ্যালেঞ্জ, দুর্বল আমলাতন্ত্র, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার উত্থান-পতন ও নীতিগত সমস্যাকে ব্যবসায়ের জন্য প্রতিবন্ধকতা বলে উল্লেখ করা হয় জরিপে।
জরিপ বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশের অগ্রগতি দেখা যায়নি। হয় এটি স্থবির ছিল, নতুবা আগের তুলনায় খারাপ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সমস্যাযুক্ত কারণ হিসেবে ‘দুর্নীতি’ এখনো রয়ে গেছে। তবে অন্যান্য কাঠামোগত এবং নতুন নতুন সমস্যার ফলে দুর্নীতির তীব্রতা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
ব্যবসার প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জরিপে। এর মধ্যে রয়েছে দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ করে বিভিন্ন নীতি, কৌশল ও পরিকল্পনা নেওয়া। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে একটি বড় সংস্কার নিশ্চিত করা। আরও স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দক্ষতার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ নিশ্চিত করা। নাগরিক এবং ব্যবসায়িক সেবা নিশ্চিত করা। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আর্থিকখাতে সংস্কার, নির্বাচনী ইশতেহারে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ করার অঙ্গীকার করা।
অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দুর্নীতির পাশাপাশি নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ ব্যবসাকে আরও সমস্যায় ফেলছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে বৈদেশিক মুদ্রার উত্থান-পতন, আমলাতন্ত্র ও মূল্যস্ফীতি। আর বড় ব্যবসায়ীদের জন্য এসবের পাশাপাশি অবকাঠামোর অপ্রতুলতা সমস্যার সৃষ্টি করছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া জীবন-যাত্রার মানবৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপেশাদার আচরণ এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
এই অর্থনীতিবিদ জানান, নির্বাচনের বছর সামাজিক ও রাজনৈতিক অশান্তি আরও বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
Leave a Reply