রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ায় সংগঠনটি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) চিঠিটি পাঠায় আরএসএফ।
চিঠিতে আরএসএফ বলছে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সংগঠন বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ব্যাপক লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়ে আসছে। আমরা আশা করি, বছরের পর বছর সরকারি দমন-পীড়নের পর আপনার ঐক্যের আকাঙ্ক্ষা বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম সূচকে বাংলাদেশের বড় ধরনের পতন আটকাতে সাহায্য করবে, যেখানে দেশটি বর্তমানে ১৮০-এর মধ্যে ১৬৫তম স্থানে রয়েছে।
চিঠিতে সংগঠনটি বলছে, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের প্রতি আপনার অবিসংবাদিত অঙ্গীকারের কথা মাথায় রেখে আমরা বিশ্বাস করি, আপনার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং তথ্যের অধিকার নিশ্চিতে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সাদরে মেনে নেবে।
এটি আরও বলছে, সাংবাদিকরা সেই ‘বাংলাদেশ পরিবারে’র অংশ, দায়িত্ব নেওয়ার পর আপনি যে দেশকে আপনি ঐক্যবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতেও সাহায্য করতে পারে, কারণ নতুন সরকার তাদের বিরুদ্ধে আইনের অপব্যবহার বন্ধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরএসএফ সাইবার- নিরাপত্তা আইন, আইসিটি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের নাম টেনে সংগঠনটি মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া চিঠিতে লিখেছে, আপনার পূর্বসূরি ( সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সাংবাদিকদের হয়রানি এবং আটক করতে এসব আইনকে টুল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।
আরএসএফ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে আরও বলেছে, আগের সরকারের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে এবং হত্যায় জড়িত থাকার ভিত্তিহীন অভিযোগে বিচারাধীন পাঁচ সাংবাদিকের বাংলাদেশের সংবিধানের নিশ্চয়তা অনুযায়ী সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি।
আরএসএফ বলছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে পাঁচ সাংবাদিক প্রাণ হারান। দুই শতাধিক সাংবাদিক আহত হন। সাংবাদিক সমাজ এখনো সেই শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সংগঠনটি এসব মৃত্যুর স্বাধীন তদন্ত দাবি করেছে। পাশাপাশি নিহতদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
এটি স্পষ্টভাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি এবং আগের শাসনামলের সঙ্গে তীব্রভাবে বৈসাদৃশ্য তুলে ধরবে। এ লক্ষ্য অর্জনে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন জানাতে আরএসফ সম্পূর্ণরূপে নিবেদিত। সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিচালক অ্যান্টোইন বার্নার্ড ও মহাপরিচালক থিবাউট ব্রুটিন চিঠিটি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠিটি দেন।